প্যারালাইসিসে আক্রান্ত ৯৭ বছরের বৃদ্ধ হারেজ উদ্দীন




আব্দুল আলিম,সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারের ৯৭ বছরের বৃদ্ধ হারেজ উদ্দীন, যিনি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত এবং অন্ধ, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন একমুঠো ভাত ও ওষুধের আশায়। ১১ বছর বয়সী নাতনির সাহায্যে তিনি চলাফেরা করেন, যাকে নিজের ঘাড়ে ভর করে জীবনের শেষ সময়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালাচ্ছেন। অন্যের সহায়তা ছাড়া তার আর কোনো উপায় নেই।

বুধবার দুপুর ২টার দিকে, কান্নাজড়িত কণ্ঠে, শতবর্ষী এই বৃদ্ধ তার দুঃখের কথা বলছিলেন। তিনি জানান, “আমার এক ছেলে ছিল, আবু বক্কর নামে। বয়স ৩৫ বছর। জন্ম থেকেই অন্ধ। তাকে বিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু দেড় বছরের মাথায় ছেলের বউয়ের যমজ সন্তান হয়। এর মধ্যে ছেলে সন্তানটি মারা যায়, আর বেঁচে থাকা মেয়ে সন্তানকে রেখে ছেলের বউ চলে যায়। আজ প্রায় ১০ বছর হয়ে গেল, তার কোনো খোঁজ নেই।”

হারেজ উদ্দীন আরও বলেন, “আমার স্ত্রী রোকেয়া বেগমও বয়সের কারণে ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না। তিন মাস পরপর বয়স্কভাতার ১,৮৫০ টাকা পাই, কিন্তু তা দিয়ে শুধু চাল-ডাল কিনে জীবন চলানো কঠিন। মাছ-মাংস তো দূরের কথা, ওষুধও কিনতে পারি না।”

চার বছর হলো হারেজ চোখে দেখতে পাচ্ছেন না, আর গত এক বছর ধরে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে হাঁটাচলা করতে পারছেন না। তার কণ্ঠে কষ্টের ছাপ, “দুমুঠো ভাতও জোটে না, ওষুধের জন্য কিভাবে টাকা জোগাড় করব? মানুষের কাছে হাত পাততে না হলে চার সদস্যের পরিবারে খাওয়ার জন্য কিছুই থাকে না। ঝড়বৃষ্টির দিনে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। কোনো কোনো দিন না খেয়েও থাকতে হয়, আবার কখনও এক বেলা খেয়ে কাটাতে হয়। আমাদের জীবনটা খুবই কঠিন।”

তিনি আরও বলেন, “যদি সমাজের বিত্তবান মানুষ একটু সহায়তা করতেন, তবে এই বয়সে রাস্তায় বেরিয়ে একমুঠো ভাতের জন্য হাত পাততে হতো না। সমাজের মানবিক মানুষদের দিকে তাকিয়ে আছি, তারা যদি একটু সহায়তা করতেন, তবে আমাদের বেঁচে থাকা কিছুটা সহজ হত।”
হারেজ উদ্দীন সাপাহারের আমডাঙ্গা গ্রামে বাস করেন। তার মোবাইল নম্বর: ০১৭৪৯৩০০৫১৩

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন