স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী শাসনামলের দুর্নীতিবাজ সাবেক এমপি-মন্ত্রীরা গ্রেফতার হলেও গ্রেপ্তার হয়নি সহযোগী ও একাধিক মামলার আসামি যমুনা অয়েল (সিবিএ) শ্রমিক লীগ নেতা ইয়াকুব। জন-মনে ক্ষোভ! প্রশাসন প্রশ্নবিদ্ধ!
অভিযোগ উঠেছে শ্রমিক দলের ব্যানারে শ্রমিকলীগের কার্যক্রম চালাচ্ছে যমুনা অয়েল (সিবিএ) আবুল-ইয়াকুব প্যানেল।
২০২৩ সালের ভোটবিহীন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব- সভাপতি আবুল হোসেন। একনায়কতন্ত্র হওয়াতে শ্রমিক দলই এখন হুমকিতে।
দেশব্যাপী যমুনা অয়েলের ডিপুতে শ্রমিকলীগের (সিবিএ) কার্যকরী কমিটির প্রতিটি সদস্য যমুনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে ইয়াকুবের ইশারায়। কিন্তু গন-অভ্যুত্থানের পর বিএনপি'র মোড়ক লাগিয়ে দুর্নীতির পাল উড়াচ্ছেন কৌশলে। সারাদেশ থেকে ইয়াকুবের অর্থের যোগান আসে যমুনা (সিবিএ) অন্যান্য কার্যকরী সদস্যদের মাধ্যমে।
বড় লেনদেনের মারফতে শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন থেকে শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্তি পান বলে অভিযোগ উঠেছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং যমুনা অয়েলের সিবিএ নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কা রয়েছে শ্রমিক অঙ্গনে । ইয়াকুব শ্রমিক দলের অন্তর্ভুক্ত নিলেও ব্যর্থ হয়েছেন শ্রমিক লীগের যমুনা (সিবিএ) সভাপতি আবুল হোসেন সহ অন্যান্য সদস্যরা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে শ্রমিক দলের অন্যান্য ত্যাগী নেতাকর্মীদে মধ্যে। হিসেবে গড়-মিল। অভিযোগের তীর শ্রমিক দলের সভাপতির দিকে।
পালা-বদলের কৌশলে ইয়াকুব বহুদূর এগিয়ে,, তার বিপরীতে থাকা কমিটির কাউকে কিনে নিয়েছেন। যাদেরকে কিনতে পারেননি তাদেরকে মামলা-হামলা, ভয়-ভীতি দিয়ে দূরে সরিয়ে রেখে একাই রাজত্ব করছেন। আগামী ২৭ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং যমুনা অয়েল (সিবিএ) নির্বাচনের দেশের বিভিন্ন ডিপোতে কর্মরত নিজ কমিটির সবাইকে এখনই বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেছেন ইয়াকুব।
ধর্ষণসহ ঘুম,খুন,হামলা আত্মসাৎ এর একাধিক মামলার আসামি যমুনা অয়েলে (সিবিএ) নির্বাচন করতে পারে কিনা? বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদের দিকে।
দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে ইয়াকুবের বিরুদ্ধে পরিচ্ছন্ন দুর্নীতির প্রমাণাদি দিয়ে প্রতিবেদন হলেও এক চুলও টনক নড়েনি ইয়াকুবের। তিনি নাকি শ্রমিকের দাবি আদায়ের জন্য আওয়ামী দোসরদের মদদ দিয়েছেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে যারা সরাসরি মাঠে সক্রিয় থেকে সাধারণ ছাত্র-জনতার উপর হামলা গুলিবর্ষণ, হত্যা, নির্যাতন সহ বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত তারা দিব্যি বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে বহাল তবিয়তে। যার মধ্যে অন্যতম চট্টগ্রাম যমুনা অয়েলের শ্রমিক লীগ এর ইয়াকুব। অদৃশ্য কৌশলে ছিটে-ফোঁটা আচড়্ব লাগেনি এই দোসরের। চট্টগ্রামের লালখান বাজার হাই- লেভেল রোডের নিজস্ব আলিশান ফ্লাটে আনন্দে-ফুর্তিতে টাকার বালিশে ঘুমিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন ইয়াকুব। অফিস কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত নেতৃত্ব দিচ্ছেন সারা দেশব্যাপী যমুনা অয়েলের অন্যান্য ডিপোর সদস্যদের কে। এই নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন সাধারণ আম-জনতা সহ শ্রমিক দলের (সিবিএ) নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী রাজনীতির বাহুবলিরা যাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন। অবৈধ অর্থ, অস্ত্র যোগানদাতা, বিভিন্ন ধর্ষণের আসামিরা প্রশাসনের নাকের ডগায়। যমুনার বিভিন্ন ডিপুগুলোতে লীগের হয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন ।
ঘোষণা করেছেন ২৭ফেব্রুয়ারির পর যারাই তার বিরুদ্ধে কথা বলেছে প্রত্যেককে তাদের জায়গা থেকে সরিয়ে বেহাল দশা করে দেওয়া হবে। যেন জীবনে আর কোনদিন ইয়াকুব শব্দটিও মুখে আনতে না পারে, জানালেন ভুক্তভোগী সাধারণ সদস্যরা। তারা আরো বলেন, সামনের দিনগুলো ত্যাগী নেতা-কর্মীদের জন্য ভয়ানক হতে চলেছে বলেও মনে করছেন সাধারণ কর্মীরা।
সূত্রে জানা গেছে ইয়াকুব শুধু যমুনা ওয়েলের নয় বরং পুরো দেশের জ্বালানি সেক্টরের অদৃশ্য মাফিয়া। যার হাতে রয়েছে পুরো জ্বালানি সংস্থার কল-কাঠি । রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েল এর সমস্ত কার্য-সাধন করে যাচ্ছেন বিগত আমল থেকে। নিয়োগ-বদলি, কমিশন বাণিজ্য সবকিছুই একচেটিয়া ইয়াকুবের হাতে। অভিযোগে বলা হচ্ছে যমুনা ওয়েলের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের চেয়ারের খুঁটিও ইয়াকুবের ইশারায় নড়ে। যারাই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলছে তারাই মামলা-হামলার শিকার প্রতিনিয়ত। কখনো পথে কখনো অফিস কক্ষে। যমুনা অয়েলের একজন সাধারণ কর্মচারী ইফতেখার কামাল দুদককে ইয়াকুবের সম্পদের তথ্য দিয়ে এখনো ঘরবাড়ি ছাড়া। ঘটনাটি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক পূর্বকোণে প্রকাশিত হওয়ার পরও কোন প্রতিকার পায়নি বলে জানা যায়। ভয়ে হুমকিতে মানাবেতর জীবন কাটাচ্ছে পথেপথে। টাকার বিনিময়ে ইয়াকুব সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে রাত-বিরাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর হামলাও করার অভিযোগ রয়েছে ।
ইয়াকুব এর অদৃশ্য ক্ষমতার বলে বিএনপি নেতারাও নাজেহাল। ৫ই আগস্টের পরে নতুন করে খোলস পাল্টিয়ে দল পরিবর্তন করে শ্রমিক দলের স্বীকৃতি কিনে নেন ইয়াকুব যদি অন্যান্য সদস্যরা ছাড়া। অর্থ,পেশি-শক্তি ও রাজনীতির চরকায় যমুনা অয়েলের অন্যান্যদেরকে ভয়-ভীতি ও আতঙ্কে রেখেছেন। অবৈধ পন্থায় প্যানেল দখলে রয়েছে।
ইয়াকুবের প্রতিদ্বন্দী হতে গেলে প্রাণের ঝুঁকি থাকে সবসময়। তাই কেউই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন শ্রমিক দলের (সিবিএ) কর্মচারীরা। বছরের পর বছর ধরে একচেটিয়া ক্ষমতায়। গুটি কয়েক বিরোধিতা করলে চক্ষুশুলের শিকার। সূত্রমতে দেশের বিভিন্ন ডিপোতে ইয়াকুবের অদৃশ্য নেটওয়ার্ক বিদ্যামান। তারাই অর্থের মুল যোগানদাতা। শ্রমিক লীগের যমুনা (সিবিএ) আবুল-ইয়াকুব পরিষদের প্রতিটি সদস্যই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। ভাগের অংশ নিয়মিত ইয়াকুবকে চাঁদা আকারে দিয়ে থাকেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি অন্যান্য বাজেটও সকলে মিলে ভাগাভাগি হয়।
যমুনা অয়েল (সিবিএ) শ্রমিক লীগের অন্যান্য কার্যকরী সদস্য যারা প্রতি মাসে ইয়াকুবকে নিউমিত চাঁদা প্রদান করেন :
১) আবুল হোসেন, যমুনা (সিবিএ) শ্রমিক লীগের সভাপতি, চট্টগ্রাম টার্মিনাল অফিস, পদবী : অপারেটর (এসটি) চট্টগ্রাম ডিপো।
২) জয়নাল আবেদীন। আবুল-ইয়াকুব প্যানেলের কার্যকরী সভাপতি, গেজার, ফতুল্লা ডিপো, নারায়ণগঞ্জ।
এভাবে নামে বেনামে তাদের অনেক সহযোগী রয়েছে। যারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে পরিচয় অজ্ঞাত রেখে কাজ করছেন তারা সারা দেশব্যাপী ইয়াকুবের হয়ে।
কি পরিমাণ দুর্নীতি হচ্ছে রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ণ অয়েল সেক্টরে যা নজীর বিহীন।
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ ও দেশের সাধারণ জনগণ। জ্বালানি সেক্টরে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয় সরকারকে এ মাফিয়াদের জন্য। যেন দেখভাল করার কেউ নেই।
শুধু তাই নয়, বিভিন্ন অফিস সংক্রান্ত কেনাবেচা থেকে শুরু করে মেরামত বা অন্যান্য কাজ বাবদ বড় অংকের বিল থেকে বিশাল কমিশনের মাসোয়ারা নেন আবুল- ইয়াকুব প্যানেল। যার অধিকাংশ টাকা চলে যায় ইয়াকুবের ধন ভান্ডারে। উপরে কিছু সাধু জনকে নারী ও মদ দিয়ে মনোরঞ্জন করতে কিছু খরচ ব্যয় হলেও আর তেমন কোন খরচের খাতই থাকে না। তাই অর্থনৈতিকভাবে এই হিসেবেও বেসামাল আর বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই ইয়াকুব।
ইয়াকুবের গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালীতে ইয়াকুব কে টাকার কুমির ও বলা হয় সেখানে। মেজবানি আনুষ্ঠানিকতা বিভিন্ন রকমের সাজসজ্জা তার রয়েছে একচেটিয়া আধিপত্য। এসব বিষয় নিয়ে সাধারণ জনতার মনেও প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে :
আর এই অর্থের কারণেই তাকে আজ পর্যন্ত কেউ হারাতেও পারেনি পাশেও এসে দাঁড়ানোর সাহস পায়নি বলে মনে করছেন শ্রমিক দলের যমুনা ওয়েলের ভুক্তভোগী কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন।
সম্প্রতি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম, রাহাজানি, লুট ছাত্র জনতার বিরুদ্ধে হামলা, নারী ধর্ষণ সহ বিভিন্ন মামলা হলেও প্রশাসন নীরব বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ সহ ভুক্তভোগীগন ও ত্যাগী নেতা-কর্মীরা।
বিষয়টিকে ঘিরে শ্রমিক দলে সাধারণ মানুষের মনে তীব্র ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে। নগরীর ডবলমুরিং থানায় ৫ই আগস্ট ছাত্র জনতার উপর হামলার একাধিক মামলা ও ইপিজেড থানায় একটি ধর্ষণের মামলা থাকলেও তাকে কোনভাবে আটকানো যাচ্ছে না। তাই সান্তনা কোন কিছুতেই খুঁজে পাওয়া দায় সুশীল সমাজের। আফসোস করে কয়েকজন সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মী সাংবাদিকদের বলেন । দুয়েকজন প্রার্থী বিরোধিতা করার কারণে তাদেরকে এখনই হুমকি দিয়ে ইয়াকুব এক-ঘরে করে রেখেছেন। এখন প্রশ্ন হল কার ইঙ্গিতে কোন ইশারায়? কিভাবে? ইয়াকুব এত বড় মাফিয়া হলো? ইয়াকুব কে তেল সেক্টরের ডন হিসেবেও চিনেন সকলে।
সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে বহু প্রতিবেদন প্রকাশিত ইয়াকুবের বিরুদ্ধে কিন্তু কিছুই হয়নি ইয়াকুবের।
তাই ভুক্তভোগী গণ কখনো ছুটছে কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বার-প্রান্তে অথবা কখনো ছুটছে প্রতিকার পাওয়ার জন্য কোন সংস্থার কাছে। সবই যেন ব্যর্থতায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে।
পাশাপাশি ইয়াকুবও ছুটছে রফা-দফার জন্য। কখনো ছুটছেন ক্ষমতার গদি টিকিয়ে রাখার জন্য। আর এই ক্ষমতার জন্য নতুন করে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে দ্বিধাবোধ করবে না ইয়াকুব জানিয়েছেন সকলের মাঝে।
চলমান রাজনীতিতে রাষ্ট্রের চিহ্নিত একজন দুর্নীতিবাজ বেপরোয়া। ইয়াকুব কে আইনের আওতায় আনার মতো সাধ্য কারো আছে বলে মনে করেন না সাধারণ কর্মচারী ও কর্মকর্তাবৃন্দ।
জ্বালানি সিন্ডিকেটে ইয়াকুব শুধু একাই নন। রয়েছে দেশজুড়ে তেল সেক্টরে বিশাল বাহিনী প্রতিমাসে তার জন্য কোটি কোটি টাকা যোগান দেন যমুনা অয়েলের ইয়াকুবের মিত্ররা। ইয়াকুবকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে নিজেরাও লাভবান। পাশাপাশি দুর্নীতিতে বেগবান করছেন বহু সুশীল ব্যক্তি কে । এখানে অনিয়মই যেন নিয়ম।
একাধিকবার ফোন করেও মোটা ফোনে পাওয়া যায়নি।