ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় স্ত্রী ও শ্যালিকাকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার আমির হোসেন (২৮)। জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন, স্ত্রী জ্যোতি আক্তারের সঙ্গে অন্য ব্যক্তির প্রেমের সম্পর্ক চলছে এমন সন্দেহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
বুধবার (০৫ মার্চ) বিকাল ৪টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (চতুর্থ আদালত) আসমা জাহান তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন দাস।
আমিরের বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামে। সোমবার ভোররাতে কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ধজনগর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী ও শ্যালিকাকে হত্যার পর পালিয়ে যান আমির। মঙ্গলবার তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমির হোসেনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়।
নিহত দু'জন হলেন- ধজনগর গ্রামের মৃত রওশন আলীর মেয়ে জ্যোতি আক্তার (২০) ও তার বোন স্মৃতি আক্তার (১৪)। প্রায় দেড় বছর আগে জ্যোতি আক্তার ও আমির হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহের কারণে বেশিরভাগ সময়ে জ্যোতি বাবার বাড়ি ধজনগর গ্রামে থাকতেন।
আমিরের জবানবন্দির বরাতে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন দাস বলেন, ‘ঘটনার পাঁচ-সাত দিন আগে সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ি ধজনগর গ্রামে আসেন আমির। ওই সময় স্ত্রী জ্যোতিকে অন্য পুরুষের সঙ্গে কথা বলতে দেখেন। বিষয়টি নিয়ে আমিরের সন্দেহ হয়। এ নিয়ে রবিবার রাতে জ্যোতির সঙ্গে আমিরের কথা হয়। ওই সময় স্বামীর কাছে ক্ষমা চান জ্যোতি। আমির শর্ত দেন, তার সঙ্গে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার জামতলীতে নিজেদের বাড়িতে ফিরলে মাফ করবেন। কিন্তু জ্যোতি জানান, তিনি শ্বশুরবাড়িতে পরে যাবেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। সোমবার ভোরে আমির শ্বাসরোধে জ্যোতিকে হত্যা করেন। স্ত্রীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও হত্যার ঘটনা দেখে শ্যালিকা সেখান থেকে পালিয়ে রান্নাঘরে চলে যায়। রান্নাঘরে গিয়ে শ্যালিকাও শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তার লাশ এনে বিছানায় শুইয়ে রেখে ঘর থেকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যান।
সোমবার সকালে লাশ উদ্ধারের পর কসবা থানায় হত্যা মামলা করেন জ্যোতি ও স্মৃতির ভাই মোবারক হোসেন। গ্রেফতারের পর আমিরের কাছ থেকে এক জোড়া কানের দুল, স্বর্ণের চেইন, একজোড়া নূপুর ও নগদ সাত হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বিকালে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Tags
ব্রাহ্মণবাড়িয়া