দুর্নীতি করেছে মুনসুর টাকার মালিক হয়েছেন স্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি দেশের সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ ও দেশের সর্বস্থরের দূর্নীতি প্রতিরোধ করে এ দেশকে একটি সমৃদ্ধশালী, কলুষমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য ছাত্র জনতা রাজপথে তাজা রক্ত ঢেলে আত্মাহুতি দিয়ে স্বেচ্ছায় শাহাদাত বরণ করেছে। কিন্তু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দেশের প্রতিটি সরকারী বেসরকারী প্রষ্ঠিানে বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের মদদ পুষ্ট হয়ে চরম দুর্নীতি করে আজও বহাল তবিয়তে ধাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মুনসুর আহমেদ গং, বিগত আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের সময়কালে কোটি কোটি টাকা দূর্নীতি মাধ্যমে আত্বসাৎ করেছে। সূত্রে জানা যায় যে, মুনসুর আহমেদ ২০২১ সালে নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতালে যোগদান করে ঐ বছরই (সরকারী কর্মচারী আচরণবিধি ১৯৭৯ এর ১৭ (৩) লংঘন করে তার স্ত্রীর নামে করা মেসার্স তাহিরা এন্টাপ্রাইজ নামে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান খুলে হাসপাতালের ধোলাই, প্রিন্টিং প্রেস, আসবাবপত্র সহ ময়লা পরিবহনসহ একচেটিয়াভাবে সব টেন্ডার ভাগিয়ে প্রচুর সরকারী টাকা আত্বসাৎ করে আসছে। কোন দরপত্র আহবান না করেই এই সব কাজের কার্যাদেশের মাধ্যমে নেয়া হয়েছে যা সম্পূর্ণ বেআইনী। অদ্য পর্যন্ত বেআইনি ভাবে ঠিকাদারী/সরবরাহকারীর কাজ করে আসছে। মুনসুর আহমেদ দপ্তরের প্রধান সহকারী এবং টেন্ডার সংক্রান্ত যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ তার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে বিধায় সে সহজে উক্ত বেআইনী কাজে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য সেবা কে দূর্নীতির সরর্গরাজ্যে পরিনত করতে পারছেন। তার এই কাজে আর কে কে যুক্ত তা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বের করা হবে বলে জনগণ আশা করছে। জানা যায় যে তৎকালীন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নূরুল ইসলামের প্রত্যক্ষ সহায়তা ও যোগসাজসে ২০২১-২০২২ অর্থ বছর হতে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছর পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতালে কোটেশন ও ভাউচারের মাধ্যমে যত বিল করা হয়েছে তার পুরোটাই মুনসুর আহমেদ এর স্ত্রীর নামে করা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাহিরা এন্টারপ্রাইজের নামে করা হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়াও মুনসুর আহমেদ এর প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাহিরা এন্টার প্রাইজ নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানা হাসপাতাল, পলাশ থানা হাসপাতাল, দেবহাটা থানা হাসপাতাল, বটিয়াঘাটা, কালীগঞ্জ, মড়োলগঞ্জ, শ্যামনগর থানা হাসপাতালে সরবরাহকারী হিসাবে মালামাল সরবরাহ করে আসলেও বস্তুত উক্ত প্রতিষ্ঠানের ঠিকানার কোন অস্থিত্ব পাওয়া যায় নাই।
সূত্রে মতে আরো জানা যায় যে, ভুয়া বিল ভাউচার ছাড়াও জেলা সদর হাসপাতালের ছয়টি গ্রুপের ঔষধপত্র, যন্ত্রপাতি, গজ ব্যান্ডেজ তুলা, লিনেন সামগ্রি, ক্যামিকেল রি-এজেন্ট, ফার্নিচার কেনা কাটার টেন্ডার অবাঞ্চিত ও অযাচিত শর্তাবলি যুক্ত যাতে অন্য কোন সরবরাহকারী দরপত্র অংশগ্রহণ করতে না পারে সে ব্যবস্থা করে মুনসুর আহমেদের একান্ত ঘনিষ্ট সরবরাহকারী/ঠিকাদার” ইলেকট্রো সাইন্স” নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে বিগত তিন বছর ধরে কাজ ভাগিয়ে দেওয়ার প্রত্যক্ষ প্রমাণ রয়েছে।
অথচ, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্বেও বছরের পর বছর একই ঠিকাদারী/সরবরাকারী প্রতিষ্ঠান “ইলেকট্রো সাইন্স” সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে সরকাররের কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। উদাহরন স্বরূপ:- ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ঔষধপত্র ক্রয়ের জন্য দরপত্র সিডিউলে সংশ্লিষ্ট কাজের যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল বিজ্ঞপ্তি জারীর বিগত পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং নূন্যতম ২ কোটি টাকা কোন ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী হাসপাতালের হতে হবে বলে দরপত্রের শর্তে উল্লেখ ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে ইলেকট্রো সাইন্স এমএসআর এর জন্য ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে ২০১৯ যেখানে স্পষ্ট করে ব্যবসা শুরুর তারিখ উল্লেখ আছে ২০১৮ সাল। ড্রাগ লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে ২০২২ সালে। সুতরাং উক্ত এলাকার সুশীল জনগন দাবি জানাচ্ছে ২০২১-২০২৪ সাল পর্যন্ত সকল কেনা কাটার সঠিক পুনঃনিরীক্ষা ও পুনঃতদন্তের।
শুধুমাত্র “ইলেকট্রো সাইন্স”-এ বাজেট ও অতিরিক্ত বরাদ্দের নাম করে এমএসআর খাত থেকে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে টাকা ৭,০১,৮৯,২৮২.০০, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে টাকা ৯,২২,৯৯,৫১৩.০০ ও ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে টাকা ৪,৪৪,০৫,৫৪৪.০০ অত্র হাসপাতাল থেকে একচেটিয়াভাবে কার্যাদেশ গ্রহন করে।
জানা যায় যে, উক্ত চক্র সরাসরি শেখ পরিবারে ঘনিষ্ট মদদ তুষ্ট হয়ে এরই মধ্যে সারাদেশ থেকে শত কোটি টাকা টেন্ডার বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে যার কার্যক্রম ৫ই আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পরেও বিদ্যমান। শুধু তা-ই নয় এই চক্র দরপত্রের কাজ না পেলে অসৎ উদ্দেশ্যে মামলা করার মাধ্যমে একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার যথেষ্ঠ প্রমাণিত।
মুনসুর আহমেদের সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির উপরে বাংলা ভিশন চ্যানেলসহ কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোন না কোন কালো হাতের ইশারায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
সবশেষ ৫ই আগস্ট পরবর্তীতে মুনসুরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলো তদন্তের জন্য জনস্বার্থে গত ১৩ই নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. বরাবর মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক লিখিত অভিযোগ (যাহার স্মারক নং ৫৩-৩৪৮৯ তারিখ: ১৩/১১/২০২৪খ্রি.) দাখিল করা হলেও অদ্যবদি এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। সুতরাং প্রশ্ন থেকেই যায় যুগে যুগে দূর্নীতিবাজ মুনসুরের কার মদদে এখনো বহাল তবিয়তে?
যে কর্মচারীর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ সে কর্মচারী মুনসুর তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী শর্তেও বর্তমান অর্থবছরেও ই-জিপি তথা টেন্ডার কার্যক্রমে করে যাছে।
সুতরাং নরসিংদী স্বাস্থ্য বিভাগের বর্তমান কেনাকাটার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়নের জন্য জরুরী ভিত্তিতে মুনসুর আহমেদকে নরসিংদী জেলার বাইরে বদলীর ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং তাদের বিরুদ্দে আনিত দূর্নীতির অভিযোগ সমূহের সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এলাকাবাসী তীব্র দাবি জানাচ্ছে।
নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মুনসুর আহমেদ এর সাথে তার মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলে এইসব কিছু আমি করিনাই কমিটির দায়িত্ব ছিলো তারা করেছে।
Tags
বাংলাদেশ