শ্রীমঙ্গলেও লেবুর দাম চড়া



 ‘লেবুর দেশ’ হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। পাহাড়ি টিলায় সহজেই চাষ করা যায় লেবু। শ্রীমঙ্গলের লেবুর চাহিদাও রয়েছে দেশজুড়ে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে প্রতিপিস লেবু বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ থেকেই তিনগুণ দামে। জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় লেবুর দাম এখন চড়া।

বুধবার (৫ মার্চ) বিকেলে জেলা শহরের খুচরা বাজার টিসি মার্কেট ও পশ্চিমবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগে যেখানে আকারভেদে প্রতিহালি লেবু বিক্রি হতো ২০-৪০ টাকা দরে, এখন সেই লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়।

লেবুচাষি, আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লেবুর মৌসুম হচ্ছে বর্ষাকাল। এসময় প্রচুর লেবু উৎপাদিত হয়। তখন দামও থাকে কম। শুকনো মৌসুমে লেবুর উৎপাদন প্রাকৃতিক কারণেই কমে যায়। যারা গাছের বাড়তি যত্ন করেন, তাদের বাগানে সবসময় লেবু থাকে। তবে সেটা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এমন পরিস্থিতিতে রমজানে লেবুর চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়ে যায়।

সবজি বাজারে কথা হয় আফজাল হোসেন নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা লেবুর দেশে থাকি। এখানেই লেবুর বাজারে আগুন। তাহলে সারাদেশে কী অবস্থা! রমজানের শুরু থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার অদৃশ্য এক প্রতিযোগিতা চলছে।

বেসরকারি চাকরিজীবী তারেক মিয়া বলেন, ‘ইফতারের সময় শরবত পান করতে দুই পিস লেবু কিনলাম ৪০ টাকা দিয়ে। অথচ কিছুদিন আগে একই সাইজের লেবু ২০ টাকায় কিনেছি।’

পশ্চিমবাজারে টুকরিতে লেবুর পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন জাকির মিয়া। দেখা গেলো বেশিরভাগ লেবুর রং হলদেটে। তিনি বলেন, ‘অন্যসময় সবুজ লেবুর তুলনায় এগুলো কম দামে বিক্রি করতাম। তবে এখন মাঝারি আকারের এই হলুদ লেবুর দাম চাইছি পিস ১৫ টাকা।’

লেবু বিক্রেতা মতিন মিয়া বলেন, ‘শ্রীমঙ্গল থেকে ৩০০ পিস লেবু এনেছি তিন হাজার ৮০০ টাকায়। এখন আকারভেদে প্রতিহালি ৬০-৮০ টাকা দরে বিক্রি করছি। অথচ এক সপ্তাহ আগেও বড় আকারের লেবু হালি বিক্রি করেছি ২০-৪০ টাকায়।’

শ্রীমঙ্গলের আড়তদার রাজিব আহমদ বলেন, ‘বর্তমানে লেবুর উৎপাদন কম। বাজারের চাহিদা মতো লেবু সরবরাহ করতে পারছি না। তবে কিছুদিন ধরেই লেবুর বাজার চড়া।’

লেবুচাষি শামসুল ইসলাম বলেন, ‘এখন গাছে লেবু খুবই কম। খুব যত্ন করে সার ও পানি দিয়ে গাছে লেবু টিকিয়ে রাখতে হয়েছে। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে। বৈশাখ মাস থেকে লেবুর সরবরাহ বাড়বে, তখন দাম কমে যাবে।’

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, মৌলভীবাজারে এক হাজার ৭৪২ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হয়। তবে এখন প্রজননের সময় না, লেবুগাছ পরিচর্যার সময়। তারপরও কিছু লেবু পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে চাহিদার চেয়ে জোগান কম, এজন্য দাম বেড়ে গেছে।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন