প্রায় শারীরিক সর্ম্পক করতেন দুজন, বিয়ের জন্য চাপ ও ধর্ষণ মামলার হুমকি দেওয়ায় নারীকে হত্যা

 

দেবিদ্বারে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তারদের একজন সাত্তার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দেবিদ্বারে ব্রিজের নিচে থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ থেকে র‌্যাব ও পুলিশ পৃথক দুটি অভিযান তাদের গ্রেপ্তার করে বলে সোমবার বিকেলে নিশ্চিত করেন দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ।

গ্রেপ্তারকৃত হলো– মুরাদনগর উপজেলার গুঞ্জর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে ফারজানা পরিবহনের বাসচালক মো. মহিউদ্দিন (৩৫) ও তাঁর সহযোগী (বাসের হেলপার) একই উপজেলার কুলুবাড়ী গ্রামের মৃত সেকান্দর আলীর ছেলে মো. সাত্তার (৫৫)। গত ৫ আগস্ট শাহনাজ নামের ওই নারীকে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় পুলিশ ফারজানা পরিবহনের একটি বাস ও হত্যায় ব্যবহৃত লোহা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানান ওসি।

পুলিশ বলছে, বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় ওই নারীকে হত্যার পর তাঁর হাত–পা বেঁধে ইউসুফপুর এলাকার একটি ব্রিজের নিচে ফেলে দেওয়া হয়। গ্রেপ্তার সাত্তারের সঙ্গে ওই নারীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল। আসামিরা প্রাথমিক জবানবন্দিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

ওসি বলেন, ‘এ ঘটনায় আজ দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে নেওয়া হলে সেখানে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় তারা। এর আগে গত ৭ মার্চ এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. সবুজ বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।’

পুলিশ সূত্র জানায়, শাহনাজ বেগমের সঙ্গে বাসের হেলপার মো. সাত্তারের পূর্ব পরিচয় ছিল। তারা দুজন প্রায়ই শারীরিক মেলামেশা করত। এক পর্যায়ে সাত্তারের মাধ্যমে শাহনাজের সঙ্গে পরিচয় হয় চালক মহিউদ্দিনের। পরে টাকার বিনিময়ে শাহনাজের সঙ্গে বেশ কয়েকবার শারীরিক সর্ম্পক করেন মহিউদ্দিন। এই সম্পর্ক গভীর হলে এক পর্যায়ে শাহনাজ মহিউদ্দিনকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দেন। স্ত্রী-সন্তান থাকায় তাঁর প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় মহিউদ্দিন। এরপর বিয়ে না করলে ধর্ষণ মামলার হুমকি দেয় শাহনাজ। পরে গত ৫ মার্চ মহিউদ্দিন শাহনাজকে কোম্পানিগঞ্জে ডেকে নেয়। এরপর মহিউদ্দিন শাহনাজকে তাঁর চালিত ফারজানা পরিবহনের বাসে করে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ইউসুফপুর এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে কথাবার্তার এক পর্যায়ে মহিউদ্দিন বাসে থাকা লোহার রড দিয়ে শাহনাজের মাথায় আঘাত করলে অজ্ঞান হয়ে যান শাহনাজ। পরে ওড়না ও রশি দিয়ে শাহনাজের হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ব্রিজের নিচে ফেলে বাস নিয়ে পালিয়ে যান মহিউদ্দিন। পরে হেলপার মো. সাত্তার গাড়িতে থাকা রক্ত ও অন্যান্য আলামত ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে ফেলেন।

ওসি শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘আসামি মহিউদ্দিন ও সাত্তার কুমিল্লা আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শাহনাজ বেগমের ব্যবহৃত ওয়ালটন মোবাইল সেট উদ্ধার এবং হত্যায় ব্যবহৃত একটি লোহার রড ও ফারজানা পরিবহনের একটি বাস জব্দ করা হয়েছে।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন